ঢাকাTuesday , 9 May 2023
  1. আন্তর্জাতিক
  2. ইসলাম
  3. খেলাধুলা
  4. গণমাধ্যম
  5. জাতীয়
  6. দেশজুড়ে
  7. বিনোদন
  8. রাজনীতি
  9. শিক্ষাঙ্গন
  10. শেয়ার বাজার
  11. সাহিত্য

আজ আমি বড্ড ক্লান্ত

Link Copied!

জীবন! শেষ হয়েও হয়নি শেষ, তাহলে এটাই বাস্তবতা? এইতো সূর্যের আলো দিয়ে শুরু হয় একটি সুন্দরতম দিন। ভোর থেকেই সবাই সবার মত বেস্ত হয়ে পরে কে রাখে কার খোজ আহ!! 

এইতো সেদিন এর কিছু ঘটনা বলি, দিনটি ছিলো রমজান মাস যতদূর মনে আছে ২১ রোজা সকাল বেলা অফিস যেতে হবে তাই রাতেই ফোনে এলার্ম দিয়ে রাখি সময় মতো উঠে পরি ক্লান্ত শরীর কি আর করার অফিস তো যেতেই হবে। যাক বের হলাম অফিসের জন্য হ্যা, সময় মতো চলে আসি অফিসে, রাস্তায় হাজারো যুদ্ধ করে অফিসের সামনে এসে দীর্ঘ একটা শ্বাস!! কত দিন চলবে এই যুদ্ধ এই ভাবতে ভাবতে কখন যে লিফট এসে দারিয়ে আছে ভুলেই গিয়েছি।

আমার অফিস ৭ঘন্টা ছিলো রমজান মাস বাসায় মা-বাবা ভাই-বোন সবাইকে ছাড়া আমি কখনো ইফতার করি নি কিন্তু সে দিন আমি আমার জীবন যুদ্ধ হেরে যাই। আমার জীবনের প্রথম একটি ছোটখাটো চাকরি বলা যায় এটি, কিন্তু সেদিনই আমি বুঝতে পারি আসলেই কী জীবন এত সহজ? বাবার থেকে কত শুনতাম তুমিও একদিন বাবা হবে সব বুঝবে, যাও নাহ দুনিয়া ঘুরে দেখো কষ্ট কর কখনো টাকা ইনকাম করে দেখছো দেখি সময় হোক দেখবে। হ্যা তবে আমি সেদিন বুঝে গিয়েছিলাম এইবুঝি বাবার কথা সত্যি হলো। বাবা এক হার না মানা যুদ্ধার নাম, আসলে আমরা মুখে যেভাবে বলি নাহ এই জীবন সত্যি এত সহজ না। মাত্র ইন্টার পাস করে বাবার কষ্ট উপলব্ধি করার জন্য বের হই। অফিস শেষ ঠিক ৪ বেজে ২মিনিট মগবাজার থেকে মৌচাক ফ্লাইওভারের ডালে দাঁড়িয়ে আছি। সব কাজ কর্ম শেষ এবার বাসায় যাবার পালা খুব খুশি বাসায় যাবো সবার সাথে ইফতার করবো। কিন্তু সেদিন আমার আর বাসায় ইফতার করা হয়ে উঠে নি, আমি আবার সেই যুদ্ধের মোকাবেলা, এবার আর রেহাই হলো না হঠাৎ করেই মা-র ফোন বেজে উঠে ধরলাম, হ্যালো মা: বাবা কই তুই, মা আমি আসছি রাস্তায় বেশি সময় লাগবে নাহ চলে আসবো বাসের জন্য দাড়িয়ে আছি, এই বলে কেটে দিলাম মার ফোন।

আজ আর যুদ্ধ শেষ হলো না। ইফতারের বাকি আর ৩০ মিনিট কি আর করার চলে গেলাম অফিসের কলিগদের সাথে ইফতার করে নামাজ শেষ করলাম। মা-র মন এর মধ্যে অনেক বার কল করে ধরে বললাম মা আজ আমার আর আসা হবে না কারন, রাস্তায় যুদ্ধে আমি হেরে গেলাম। ভাবলাম ইফতারের পর সমস্যা নেই যুদ্ধ তো আবার শুরু কি আর করার প্রায় ২ ঘন্টা পর আমি সফল হই, বাসায় আসলাম ৯টায় খুব ক্লান্ত শরীর, তাই আজও আমি সত্যি ক্লান্ত।

কিসের যুদ্ধ হতে পারে? ধাক্কা লাগছে তাই না, স্বাভাবিক তাহলে শুনুন, যারা এমন যুদ্ধের মোকাবেলা করেছেন তারা বুঝে গেছেন, রাজধানীতে জ্যাম একটি বিশাল সমস্যা। গাড়ি জ্যামে থাকলে আসতে দেরি হয় মানুষ স্বাভাবিক ভাবে অনেক জমে থাকে একটি গাড়ি আসা মাত্র দেখা যায় মানুষের কষ্ট যে যার আগে উঠতে পারে। কিছু মানুষ তো জীবন বাজি রেখে জুলে জুলে যায় দেখে মনে হয় এই বুঝি বাসটা উল্টে যাবে। এই কষ্টটা তুলনামূলকভাবে রাজধানীতে দেখা যায়। আমরা সাধারন মানুষ সময় মত কোথাও পৌঁছাতে পারি না যুদ্ধ করে লড়াই করে যেতে হয়। এটাই আমাদের কি সোনার বাংলাদেশ? যে দেশের রাজধানীতে এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় সে দেশ কখনোই উন্নয়নশীল দেশ হতে পারে না।

বাংলাদেশের মানুষ আড্ডাপ্রিয়। আড্ডাবাজ জাতি হিসেবে আমাদের সুনাম রয়েছে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসত আড্ডা দিতে টিএসসি রমনা চারুকলা শাহবাগ আজিজ মার্কেটে। এমনকি ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে অনেকেই সেই আডায় যোগ দিতেন। সে ধরনের আড্ডা এখন আগের চেয়ে অনেকটা কমে গেছে। আড্ডা হয় এখন জুমে ঘরে বসেই। ট্রাফিক জ্যাম যেন আমাদের পেছনে সুপার গ্লুর মতো লেগে আছে। জ্যাম থেকে মুক্তি পেতে আমরা ব্রিজ, ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছি। তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। মেট্রোরেলেও কি স্বস্তি আসবে?

আমাদের শারীরিক উপস্থিতি কমছে। মানবীয় প্রেম হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক। সম্পকের্র গভীরতাও আগের মতো নেই। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া নাগরিকরা বাইরে যেতে চায় না। এভাবেই বদলে যাচ্ছে আমাদের চিরাচরিত সহজ সরল নাগরিক জীবন।

লেখক : মোঃ সিয়াম হোসাইন

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।